একদিন বাবা, মা কে প্রশ্ন করলো-
চোখের জল নোনতা কেন হয় বলতে পারো?
বলতে পারো রক্তের রং দগদগে লাল কেন?
মায়ের উত্তর ছিল-
নাহ্!বিজ্ঞান পড়িনি।
আচ্ছা, পৃথিবীর এই ব্যপ্তিহীনতায় নিজেকে কী মনে হয়?
কখনো কী চোখ খুলে দেখেছো
তোমার মধ্যে তুমি কতটুকু আছো?
এবারও মায়ের উত্তর-
নাহ্,দর্শন পড়িনি।
তাহলে বলো, মানুষ তার গুনগত দিনগুলি অপচয় করে পরিমাপগত দীর্ঘায়ু চায় কেন!
কেন মানুষ নিঃশব্দে নিঃস্ব হলেও শূণ্য হয় না!
এক গাল হাসি নিয়ে মা বললো-
গণিতে যে বড্ড কাঁচা ছিলাম।
আচ্ছা, তাহলে বলো, পৃথিবীর এতো আয়োজনে
নিজেকে কোথায় রাখতে পারলে সুখী হতে!
অথবা সুযোগ পেলে তুমি কোথায় যেতে চাও?
মা একটু আনমনা হয়ে উত্তর দিলো-
এতো দেশ তো চিনি না,
আমার ভূগোল বলতে শুধু এই সংসারটুকুই!
আচ্ছা, তুমি তো আমার সাথে এতোটা বছর পার করলে,
সংসার বিজ্ঞানেও তোমার তীক্ষ্ণতা!
বলোতো কতটা তুমি সফল হয়ে আমাকে পেয়েছো?
-মৃদু হেসে সে উত্তর দিলো-
একজীবনে যতটা পেলে মানুষ নাটকীয়তা কাটিয়ে উঠতে পারে ঠিক ততটাই তোমাকে পেয়েছি!
আর সফলতা?
সে তো আমাকে যতটা ভাঙতে ভাঙতে পরিত্যাক্ত করতে পেরেছি তার বেহিসাবি ফলাফল ছিল মাত্র।
আমাদের মায়েদের জীবন বলতে এতটুকুই,
পাওয়া না পাওয়ার কোন হিসেব থাকে না
অথচ তাদের অর্জনের ঝুলিটা কানায় কানায় ভর্তি।
জীবনটা কেটে যায়
কার কীসে ভালো-মন্দ ভাবতে ভাবতেই,
বাকি যেটুকু সময় পায়
সেখানে দুশ্চিন্তার জন্য কোন চিন্তাই আসে না।
তবু দিনশেষে
সপ্তাহ শেষে
মাস শেষে
আমরা দাপটে গলায় বলি কী করো সারাদিন?
কী করে না সারাদিন তার হিসেব কী আমরা রাখি?
আদো কি সময় হয় আমাদের
মানুষটা সারাদিন কী করছে দেখার ?
অফিসের একটা সীমাবদ্ধ সময় আছে
স্কুল-কলেজেও শুক্র-শনি হিসেব হয়
অথচ সংসারের!
সংসারে একজন মা কখনো কী ছুটি পায়?
যেদিন সব বন্ধ সেদিন আমরা স্পেশাল ম্যানু খেতে চাই
ঘুম থেকেও উঠি দেরি করে,
কখনো কি ভেবেছি মানুষটাকে অন্তত একটাদিন হাতে হাতে কাজ করে দেওয়া আমাদের নৈতিকতার মধ্যে পড়ে?
যে মানুষটা জীবনের সব সমীকরণের সমাধান
কেবল সংসার দিয়ে মিলাতে চায়
আমরা আদো কী বুঝি সেও ক্লান্ত হয়ে উঠে!
তারও ছুটি চায়?
সংগৃহিত : ফেসবুক থেকে
শিরোনাম : মায়েরা কী করে সারা দিন
লেখক : জনি বড়ুয়া
শিরোনাম : মায়েরা কী করে সারা দিন
লেখক : জনি বড়ুয়া
Be First to Comment