Press "Enter" to skip to content

পুরুষ নামা : ফ্লোরা বন্যা

বিয়ে না করলে কিছু পুরুষ হয়তো এ জীবনে জানতেই পারতো না, মায়ের রান্না-ই পৃথিবীর সেরা রান্না।
সন্তান জন্ম না দিলে কিছু পুরুষ বুঝতেই পারতো না, তাঁদের মা আর বোন হলেন পৃথিবীর সবচেয়ে সফল মা।
আর সবচেয়ে ব্যর্থ মা? তাঁর নিজ সন্তানের মা।
কত প্রতিকুলতার ভিতর দিয়ে তাঁদের মা তাদেরকে পারফেক্টলি বড় করেছেন। আর তাঁর সন্তানের মা পায়ের কাছে সমস্ত সুবিধা পেয়েও ঠিক মত বাচ্চাকে গাইড করতে পারে না!
কিছু পুরুষ হলো বহুরুপী এক আজব চিড়িয়া! ক্ষেত্র ভেদে এরা এদের রূপ পরিবর্তনে ওস্তাদ! যেন সাপের খোলস বদলানোর মত।
হয়তো একজন পুরুষ পিতা হিসেবে আদর্শ, সন্তান হিসেবে বেশ দায়িত্ববান, ভাই হিসেবে হিরো, দুলাভাই হিসেবে রসিক, বন্ধু হিসেবে দিলদার, প্রেমিক হিসেবে দরিয়া, ধরে নিলাম মানুষ হিসেবেও মহামানব!
কিন্তু স্বামী হিসেবে???
হিসেবের সব গরমিল এখানে। কারন জরিপ করলে দেখা যাবে, স্বামী হিসেবে তারা অনেকেই স্ত্রীর ভোটে জিরো এবং জিরো! কিন্তু নিজেরা নিজের ভোটে হিরো, পুরাই সুপার হিরো!
শুধু ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নিলেই কি স্বামী হয়? শুধু সন্তান জন্ম দিয়ে নিজের নামটা সন্তানের নামের শেষে জুড়ে দিলেই কি সন্তানের পিতা হয়? হয় না।
স্বামী একটা বিশ্বাস, একটা ভরসা, একটা বলিষ্ঠ কাঁধ, একজোড়া শক্ত হাত! প্রচন্ড ঝড়ের ভেতর হাতটা ধরে বলা, ভয় কেন? আমি তো আছি!
অথচ কিছু পুরুষেরা তাদের চেহারার সবচেয়ে নিকৃষ্ট রূপটা দেখায় তাদের স্ত্রীদের।
নিজ স্ত্রীর রূপ- গুনের প্রশংসা করতে তারা পৌরষত্ব হারানোর ভয়ে কাতর থাকে। সম্মান তো পরের কথা!
সুন্দরী,স্মার্ট স্ত্রী অন্যকে দেখাতে তারা বেশ অহংকার বোধ করলেও, নিজ ঘরের চার দেয়ালের মাঝে একটিবারও কিন্তু বলে না, আজ তোমাকে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে! স্ত্রীর প্রশংসা করতেও ভয় পায়, যদি স্ত্রীর দাম বেড়ে যায়!
তোমার রান্নার প্রশংসায় চারিদিক সয়লাব হলেও স্বামীই হলো সেই উজবুক যে ফট করে ভরা মজলিশে বলে বসবে, লবন একটু কম হয়েছে!
তোমার শাড়ীর রং যতই দৃষ্টিনন্দন হোক সে কিন্তু তোমাকে ফিউজ করতে বলবে, এটা কি রঙের শাড়ী পরলে? সেবার মেজ আপার খালা শাশুড়ির বেয়াইন যে শাড়ীটা দিছিলো সেইটা পরতে!
হিংসা! এসব হলো হিংসা!!! স্বামী হিসেবে কিছু পুরুষেরা হলো নিম্নমানের হিংসুক জাত।
তুমি রাইস কুকারে ভাত রাঁধবে? ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোবে? এ.সি দিয়ে ঠান্ডায় ঘুমাবে?? অবসরে মোবাইল টিপবে?
কিছু কিছু স্বামীর কিন্তু জ্বলে যাবে! একটু পর পর দীর্ঘশ্বাস ছাড়বে। আহা, আমাদের মায়েরা কত কষ্ট করে গেছেন!
আরে! কষ্ট তো আমাদের বাবারাও করেছেন! ঘামে ভিজে, রোদে পুড়ে আমাদের মানুষ করে আপনাদের মত নাবালক বেকুবের সাথে বিবাহ দিয়েছেন! আমরা কি আপনাদের চকচকে জুতার দিকে তাকিয়ে হাফ ছাড়ি, আমার বাবার একটা ভালো জুতা ছিলো না বলে!
শোনেন, কাঁসুন্দী বানাবেন না। জগতে প্রত্যেক মানুষের অবস্থান ভিন্ন। একের সাথে অন্যকে মিলিয়ে চালে, ডালে ঘুটবেন না। কেউ কারো পরিপূরক নয়। ব্যালান্স না করতে পারলে চুপ থাকুন। সম্মান করতে না পারলেও অসম্মান করবেন না। তাতে জটিলতা কমবে।
বকবক করলেই পুরুষ হওয়া যায় না! যেমন চকচক করলেই সোনা হয় না।
আসলে কিছু বেকুব পুরুষেরা মাঝে মধ্যে স্ত্রীর সামনে শুধু নিজের শরীরকেই বে-আবরু করে না, নিজের ভিতরের লুকানো বিশ্রী নিজের রূপটাকেও পার্মানেন্টলি বে-আবরু করে ফেলে। অতি বিশ্রী ভাবে! নাউজুবিল্লা!!!
তো আর কী?
ও হে নাদান পুরুষ, তোমরা মানুষ হও।
ও হে স্বামীকুল, তোমরা আগে মানুষ হও,সাবালক হও, তারপর স্বামী হও।
তোমরা বুঝতে চেষ্টা করো,
তোমার স্ত্রী একজন মানুষ।
সে কারো কন্যা, কারো বোন, কারো বন্ধু।
সবচেয়ে বড় কথা, সে তোমার সন্তানের মা!
সংগৃহিত : ফেসবুক থেকে
শিরোনাম : পুরুষ নামা
লেখিকা : ফ্লোরা বন্যা

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

COPYRIGHT © 2018 | BARUA GROUP